উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা: প্রশ্নবিদ্ধ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতা
ঢাকা এখন রাজনৈতিক উত্তেজনায় টালমাটাল। একদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা তিন দফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছেন, অন্যদিকে আন্দোলনের মধ্যে পড়ে এক উপদেষ্টার ওপর প্রকাশ্যে হামলা হয়—যা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতা জনমনে প্রশ্ন তুলেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে কাকরাইলে যান। উপস্থিত আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তৃতা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মাথায় পানিভর্তি বোতল ছুড়ে মারা হয়। আহত হয়ে তিনি বক্তব্য বন্ধ করেন এবং পরে হামলাকারীকে জামায়াত-শিবির ঘরানার ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে মন্তব্য করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ভাইরাল হয়। মাহফুজ আলমের পুরোনো দুটি ফেসবুক পোস্ট—‘মুজিববাদী বামদের ক্ষমা নেই’ ও ‘একাত্তরের গণহত্যার সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে’—নিয়ে জামায়াত ও শিবিরপন্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই তাঁকে ‘টার্গেট’ করা হয় বলে অনেকের দাবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ‘অবৈধ উপদেষ্টা’ আখ্যায়িত করে একাধিক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এমনকি ধর্মীয় জলসায়ও তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে।
রাজপথে অব্যাহত অস্থিরতা, আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা এবং প্রশাসনের নীরবতা জনমানুষকে আতঙ্কিত করছে। রাজধানীর মানুষ প্রতিদিন বুঝতে পারছে না কোন সড়ক কখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো আন্দোলনে দ্রুত দাবি মেনে নেওয়া হলেও অন্য আন্দোলনে কড়া দমননীতি—এ বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাহফুজ আলম এক ধরনের আদর্শিক অবস্থান থেকে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে কথা বলায় তিনি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর রোষানলে পড়েছেন। অনেকের আশঙ্কা, তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এখন চরম ঝুঁকিতে।
এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠেছে, একজন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে আক্রমণের পরও নিরাপত্তা বাহিনীর চুপচাপ থাকা কি স্বাভাবিক? আর রাজপথে যখন-তখন রাস্তা বন্ধ করে জনগণের ভোগান্তি তৈরি করাও কি গণতন্ত্রের পথে চলে?